আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে অনলাইনে যে কোন ব্যবসা বা পণ্যের প্রমোশনের জন্য ফেসবুক খুবই কার্যকরী একটি মাধ্যম। যে কোন ব্যবসার ফেসবুক পেইজ মূলত একটি প্রমোশনাল  টুল হলেও স্বল্প পূঁজির ক্ষুদ্র এবং মাঝারী ব্যবসায়ীরা পণ্য বিক্রয়ের প্রথম এবং প্রাথমিক মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক পেইজই ব্যবহার করে থাকেন। তবে উদ্যোক্তাদের মনে রাখতে হবে অনলাইনে পণ্য বিক্রয়ের প্রধান মাধ্যম হলো নিজের ব্র্যান্ডের একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট। ব্যবসার পরিধি বৃদ্ধির সাথে সাথে তাকে অবশ্যই দীর্ঘমেয়াদে ব্যবসার স্বার্থে নিজের ওয়েবসাইটের কথা চিন্তা করতে হবে। আর ফেসবুক পেইজে ব্যবসা করার থেকে নিজের ওয়েবসাইটে ব্যবসা করার মধ্যে কিছু সুবিধাও আছে বৈকি। চলুন দেখে নিই।

ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ

হাজার হাজার ফেসবুক পেইজের ভীড়ে নিজের আরেকটি ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদে ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া যায় না। আপনার ব্যবসার জন্য ফেসবুক নিজেই একটি থার্ড পার্টি অ্যাপলিকেশন যেখানে আপনার ব্যবসার ঠিকানায় ফেসবুকও যুক্ত থাকে। আর নিজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই ইন্টারনেট জগতে আপনার ঠিকানা হবে একটিই, যেটি আপনার ডোমেইন নাম। বিশ্বের নামীদামী কোন ব্র্যান্ডই ফেসবুকের মাধ্যমে কেনাবেচা করে না, ফেসবুকে প্রমোশন করে আর নিজস্ব ব্র্যান্ডের ওয়েবসাইট থেকে পণ্য বিক্রি করে থাকে।

ক্রেতা সাধারণের আস্থার নতুন ক্ষেত্র

একই পণ্যের বিভিন্ন ফেসবুক পেইজ ভিজিট করে ক্রেতা সাধারণ খুব সহজেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। আর ফেসবুক পেইজ তৈরি করে ব্যবসা শুরু করে দেয়া এতই মামুলি কাজ যে ক্রেতারা সবসময় সেই ফেসবুক পেইজের উপর আস্থা রাখতে পারেন না। উলটো দিকে বিক্রেতার নিজের একটি ওয়েবসাইট ক্রেতাকেও সেই বিক্রেতা সম্পর্কে পজিটিভ ভাইব দেয়, ওয়েবসাইট যেহেতু বিক্রেতার জন্য একটি বিনিয়োগ খাত, সেক্ষেত্রে বিক্রেতার সিরিয়াসনেস এবং জেনুইনটি ক্রেতার কাছে প্রকাশ পায়।

পণ্য প্রদর্শনের সুব্যবস্থা

ফেসবুক পেইজে হরেক রকম পণ্য প্রদর্শনের যথাযথ ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। যদিও এখন ফেসবুকের শপ ট্যাব আছে তবে তা একেবারেই পর্যাপ্ত নয়। এছাড়া ফেসবুকে অনেক আগের পণ্য খুঁজে পাওয়াও মুশকিল, ফেসবুক পেইজে সবসময় নিউজফিডের শুরুর দুইএকটি পোস্ট বা পণ্য হাইলাইটেড থাকে। সকল ব্যবসার ফেসবুক পেইজই একই রকম দেখতে হয়। অন্য দিকে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ক্যাটাগরি এবং সাব-ক্যাটাগরি করে পণ্য তুলে ধরা যায়। বিভিন্ন পণ্য এবং কালেকশন ক্রেতার কাছে হাইলাইট করতে প্রচুর অ্যাড অপশন থাকে যা ক্রেতার জন্য পণ্য ব্রাউজিংয়ে খুবই সহায়ক। এছাড়া নিত্যনতুন ওয়েবসাইট থিমের মাধ্যমে ক্রেতার কাছে পণ্য আরো আকর্ষণীয় করে তুলে ধরা যায়।

অনলাইন পেমেন্টের ব্যবস্থা

ফেসবুক পেইজে বিক্রি করলে আপনার কাস্টমার থেকে অনলাইন পেমেন্ট গ্রহণ করা অসম্ভব। আর অনলাইন পেমেন্টের অপশন না থাকলে অনেক সচেতন ক্রেতাই আপনার পণ্য ক্রয়ে হতাশ হতে পারেন। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খুব সহজেই ক্রেতার কাছ থেকে ডেবিট বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন। আর যে কোন অনলাইন পেমেন্ট ট্রান্সেকশন খুব সুন্দর ভাবে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ট্র্যাকিং করা যায়।

ক্রেতার প্রোফাইল

ফেসবুক পেইজের মাধ্যমে যখন আপনি ব্যবসা করেন তখন প্রতিটি ক্রেতার প্রোফাইলিং করা আপনার পক্ষে সম্ভব হয় না। ক্রেতাও পেইজ থেকে কিছু কিনলে তার কোন রেকর্ড থাকেনা। এক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে খুব সহজেই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে আপনি কাস্টমার ডেটাবেইজ তৈরি করতে পারেন। আবার কাস্টমারও রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে নিজেদের ড্যাশবোর্ড পান যেখান থেকে তিনি সকল কেনাবেচার তথ্য দেখতে পারেন, বিক্রেতা থেকে নিয়মিত পণ্যের আপডেট পেতে পারেন।

ব্যবসা হোক অটোমেটেড

ফেসবুক পেইজে ব্যবসা করা মানেই একটি সম্পূর্ণ ম্যানুয়াল প্রসেস। পণ্যের ইনভেন্টরি থেকে শুরু করে কেনাবেচার হিসাব, পেমেন্ট, অ্যাকাউন্টস, কাস্টমার ডেটাবেইজ, অর্ডার প্রসেস, সিআরএম ইত্যাদি সবই কষ্ট করে সময় নিয়ে হাতে কলমে বা তৃতীয় কোন সফটওয়্যারের মাধ্যমে করতে হয়। কিন্তু ওয়েবসাইটের ব্যাকএন্ডে এই ধরণের প্রসেসগুলো অটোমেটেড উপায়ে ম্যানেজ করা যায় খুব সহজেই। ব্যবসার সার্বিক অবস্থা অটোমেটেড রিপোর্টিং এর মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব ওয়েবসাইট থাকলে, এর ফলে ব্যবসার সঠিক ট্রাকিং হয়, সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হয়। সময় এবং কষ্ট দুটোই কম লাগে।

এবার বাড়তি কিছু সতর্কতা!

ওয়েবসাইট ব্যবসার জন্য দরকারি অনুসঙ্গ হলেও আপনি যদি ওয়েবসাইট কার্যকরী ভাবে ব্যবহার করতে না পারেন বা না জানেন তাহলে তা আপনাকে পণ্য বিক্রির নিশ্চয়তা দিবে না। কিভাবে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনতে হয়, প্রমোশনের মাধ্যমে সাইটে ভিজিটর এঙ্গেজ করতে হয় এগুলো জানতে হবে। এর বাইরেও ওয়েবসাইটের ভিজিটর ট্রাকিং, রিমার্কেটিং, লিড কালেকশন, এসইও, কন্টেন্ট ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি সম্পর্কে অবশ্যই জানা থাকতে হবে। ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি এবং পারফর্মেন্স বিচার করার নূন্যতম জ্ঞান থাকতে হবে। ওয়েবসাইট থেকে সেল জেনারেট করার জন্য নিয়মিত প্রোডাক্ট, কন্টেন্ট, রিভিউ এবং প্রমোশনের আপডেট করা খুবই জরুরী। সুষ্ঠুভাবে ওয়েবসাইট পরিচালনার জন্য অনেক সময় বাড়তি লোকবলেরও প্রয়োজন হয়। আবার এই সবকিছুর সাথে জড়িত আর্থিক বিনিয়োগ। পর্যাপ্ত বাজেট ছাড়া ওয়েবসাইট বানানো বোকামি।

 

বিক্রেতা সাধারণ যেন খুব সহজেই নিজের একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট পেতে পারেন এবং নিজেই পরিচালনা করতে পারেন সেই লক্ষ্যে স্টোরিয়া নিয়ে এসেছে এক অভাবনীয় প্রযুক্তি। এই প্লাটফর্ম ব্যবহার করে যে কোন অনলাইন উদ্যোক্তা কোন ধরণের কারিগরি জ্ঞান ছাড়াই নিজেই নিজের ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারবেন সবচেয়ে সহজে, সবচেয়ে কম সময়ে এবং সবচেয়ে সাশ্রয়ী খরচে! তবে আর দেরি কেন? স্টোরিয়ার মাধ্যমে নিজের ব্যবসাকে অটোমেটেড করে নিন আজ থেকেই!

 

চাই নিজের একটি স্বয়ংক্রিয় অনলাইন স্টোর

 

(Visited 860 times, 1 visits today)
2

Comments